
হাবিবুর রহমান , কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ায় বছরের পর পর বছর ধরে চলছে অবৈধ ইটভাটা। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র না নিয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে দেদারসে চলছে অবৈধ ইট ভাটা গুলি ! ইটভাটা সমিতির নেতারা ভাটা মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে এই টাকা দিয়ে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করে পোড়ানো হচ্ছে গাছ। ফলে ভাটার দূষিত গ্যাস, তাপ ও ছাই আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন স্থানীয় কৃষক সহ শিশু ও বয়স্করা। পরিবেশ অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী, জেলায় ১৬১টি ইটভাটা আছে। এরমধ্যে পরিবেশের ছাড়পত্র আছে মাত্র ১৮টির। ১৪৩টিরই কোনো অনুমোদন নেই অর্থাৎ অবৈধ। এসব ইট ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি।স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করা হলেও নেয়া হচ্ছে না কোনো আইনি ব্যবস্থা। পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দাপটের সাথে চলে এসব অবৈধ ইটভাটা। ইটভাটা সংলগ্ন এলাকার কৃষক রবকুল , আলম , সোহাগ সহ অনেকেই বলেন,আগে জমিতে অনেক ধান হতো। কিন্তু পাশে ইট ভাটা হওয়ার ২ থেকে ৩ বছর পর ধান আর ভালো হয় না। তাই বাধ্য হয়ে এখন জমিতে তামাক চাষ করছে অনেকে । অন্য আরও অনেক কৃষক জানান, ভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকার গাছের সবুজপাতাগুলো এখন কালো হয়ে গেছে। গাছে আর কোনো ফল বড় হতে পারে না। ছোট থাকতেই ঝড়ে পড়ে যায়। তাই বাজার থেকে ফল কিনে খেতে হয়। আগে নিজের গাছের ফল খেতাম। ভাটা হওয়ার পর থেকে খেতে পারি না। সরকারের উচিত এসব ভাটা দ্রুত বন্ধ করে দেয়া।কুষ্টিয়ার ৬ টি উপজেলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইটভাটা মালিকরা বলেন, আমাদের সমিতি কম বেশি করে চাঁদার টাকা নেয়। কোথায় কি দেয় এটা তাঁরায় ভালো জানেন। প্রশাসনসহ এদিক সেদিক কম বেশি খরচ করায় তো লাগে। পুরোটাই দেখেন ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়া প্রফেসরসহ দুই একজন। কুষ্টিয়ার একাংশ ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়ারুল ইসলাম জিয়া বলেন, আমার নিজের ইটভাটাও জরিমানা হয়। জেলায় ইটভাটা সমিতির মিটিং হয়। সেখানে ৫ হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয়। আর কাউকে ম্যানেজ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। কেউ বলে থাকলে এটা একেবারেই তার মন গড়া কথা। পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া অনেক ইটভাটা রয়েছে কুষ্টিয়ায়। পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক হাবিবুল বাসার বলেন, আমাদের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে অবৈধ ইটভাটা চলবে কথাটি সঠিক নয়, আমরা অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালাচ্ছি। আমাদের সাধ্যমত অভিযান অব্যাহত রয়েছে।লোকবল সংকটের কারনে নিয়মিত না পারলেও অভিযোগ পেলে আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান এই কর্মকরর্তা।কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ ইট ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া হবে।পরিবেশ রক্ষায় কাঠ দিয়ে ইট ভাটা চালানো যে কোন মুল্যে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে ॥