
মোঃ রিপন হাওলাদার /দেলোয়ার হোসেনঃ রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ফুটপাত অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। জনচলাচলের জন্য নির্মিত ফুটপাত চাঁদাবাজির অন্যতম স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক স্থানে এসব ফুট ব্যবসার দোকানে চোরাই বিদ্যুৎ ব্যবহারের হরিলুট চলছে। মেরুল বাড্ডা হতে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত ফুটপাত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দখলে সর্বত্রে চাঁদাবাজির অভিযোগ। পথচারীদের ব্যবহৃত ফুটপাত যেনো ভাসমান ব্যবসার নির্ধারিত স্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে। বিশেষ এক সূত্র বলছে পুলিশের অদৃশ্য ছত্ররছায়ায় চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসব ফুট ব্যবসা। উত্তর বাড্ডা হোসেন মার্কেট এর সামনে থেকে মধ্য বাড্ডা ইউলুপ ও বাড্ডা লিংক রোড থেকে গুদারা ঘাট পর্যন্ত প্রধান সড়কের দুই পাশে পথচারীদের জন্য নির্মিত নান্দনিক ফুটপাত দীর্ঘদিন যাবৎ অরক্ষিত হয়ে রয়েছে। ফুটপাতের কোথাও দিয়ে স্বস্থিতে চলাচলের মতো বিন্দু মাত্র পরিবেশ নেই। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অনেকটা নিজেদের লীজকৃত বরাদ্দের স্থান হিসেবে প্রতিদিন ফুটপাত দখল করে নির্দ্বিধায় ব্যবসা করে যাচ্ছে।দেওয়া হয়েছে জাতীয় গ্রিড থেকে অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ। ব্যবসায়ীদের দখলে থাকা ফুটপাত গুলো এরিয়া আকারে অসংখ্য চাঁদাবাজদের হাতে নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।প্রত্যেক স্থানে একজন করে নির্ধারিত লাইন ম্যান রয়েছে তারা পুলিশের নামে প্রতিদিন বিভিন্ন হারে চাঁদা উত্তোলন করে।এসব লাইন ম্যানদের আবার কয়েকজন প্রধান ব্যক্তি রয়েছে তারা নাকি পুরো এলাকার চাঁদা তোলার দায়িত্ব নিয়েছে।প্রতিবেদনের অনুসন্ধানে এমন কয়েক জন লাইন ম্যানের তথ্য পাওয়া যায়। এদের মধ্যে একজনের নাম সহিদ সে স্থান ভেদে কয়েক জন লোক দিয়ে এসব ফুটপাতে ব্যবসা করা লোকজনের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে প্রতিদিন চাঁদা উত্তোলন করে।এদের মধ্যে অন্যতম চাঁদাবাজ হলো আল আমিন,মিলন, জামাল, হারুন ভূঁইয়া,কানা বাচ্চু।এরা প্রত্যেকে নির্দিষ্ট এলাকার চাঁদা উত্তোলনের দায়িত্বে রয়েছে । তাদের দায়িত্বাধীন এলাকা হিসেবে উত্তর বাড্ডা হোসেন মার্কেট থেকে এ্যাপেক্স শো-রুম পর্যন্ত চাঁদা উত্তোলনের দায়িত্বে রয়েছে আল আমিন।তারপর থেকে মধ্য বাড্ডা ওভার ব্রীজ পর্যন্ত দায়িত্বে রয়েছে মিলন। উত্তর বাড্ডা রোমিও এলাকার ফুটপাত থেকে চাঁদা উত্তোলন করে বরিশাইল্যা বাদল মধ্য বাড্ডা লিংক রোড থেকে নয়ন বিরানী পর্যন্ত চাঁদা উত্তোলন করে জামাল।এরপর থেকে গুদারাঘাট এলাকার বাড্ডা থানার অংশে গুলশান মূখী সড়কের উত্তর পাশের দায়িত্বে রয়েছে হারুন ভূঁইয়া,অপর পাশের দায়িত্বে রয়েছে কানা বাচ্চু। বিশেষ করে গুলশান এলাকায় কর্মরত লোকজন অফিস শেষে ফুটপাত ব্যবহার করতে গিয়ে নানা রকম বিড়ম্বনায় পড়েন।মূলত চাঁদাবাজির কারণে জনসাধারণের জন্য নির্মিত ফুটপাত ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।একজন কর্মজীবী নারী বলছেন এই ফুটপাত কেন বানানো হয়েছে তা দায়িত্ব নিয়ে কে বলবে আমার বুঝে আসেনা।আর যাতের উপর দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে তাদের কোন কার্যক্রম চোখে পড়ে না।প্রতি বছর জনগণের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে ট্যাক্স আদায় করে নিবে, আর সেই টাকায় নির্মিত ফুটপাত এসব ব্যবসায়ীরা অপব্যবহার করে নষ্ট করবে আবার জনগণের টাকায় ফুটপাতের সংস্কার কাজ করা হবে এটাই তো আর কি তবে কিছু দিন আগে এই অংশটি দুই একদিন হকার মূক্ত দেখেছিলাম।হয়তো আপনার মতো কোন এক সংবাদ কর্মী আমার মতো ফুটপাত ব্যবহারে ক্ষুব্ধ নারীর আক্ষেপ তুলে ধরেছেন।তার বাস্তবিক প্রমাণ দেখুন একই ফুটপাতের গুলশান থানা অংশের ফুটপাত একদম ফাঁকা পথ চলতে কতো স্বস্তি আর বাড্ডা থানা অংশের চিত্র দেখুন কতোটা ঝুঁকি ও অনিরাপত্তায় যাতায়েত করতে হচ্ছে আমাদের।আর যে সংস্থা বলছে “দূর্ঘটনা এড়াতে ফুটপাত ব্যবহার করুন” আসলে কি ফুটপাত ব্যবহার উপযোগী রয়েছে। এমন অসংখ্য সচেতনতা মূলক নীতি বাক্য সম্বলিত সাইন বোর্ড স্থাপন করে তাদের দায়িত্ব পালন করে দায় সারার চেষ্টা করছে।অথচ তাদের সদস্যদের চোখের সামনে এমন নীতি বাক্যের নস্যাৎ ঘটছে তা কে দেখবে বুঝা মুশকিল। চাঁদাবাজ আল আমিন এর সাথে কিছু দিন আগে কথা হয় সে জানায়,আমরা পুলিশকে টাকা দেই , প্রতিদিন পুলিশের গাড়ি এসে দোকান প্রতি ১০০ টাকা করে হিসেব করে নিয়ে যায়, আমার এই সাইডে প্রায় ২৫-৩০ টা দোকান বসে। এভাবে বহু বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি।কানা বাচ্চু বলে আমি দোকান থেকে সমিতির টাকা তুলি । এভাবে চাঁদাবাজরা বিভিন্ন কৌশলে তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায়।তবে মাঝে মধ্যে থানা পুলিশের অভিযানে হকার উচ্ছেদের চিত্র দেখা যায় কিন্তু ফুটপাত স্থায়ী ভাবে দখল মুক্তের পরিবেশ চোখে পড়ে না।ফুটপাত দখলের সাথে জাতীয় গ্রিড থেকে চলছে অবাধ বিদ্যুৎ ব্যবহার।এসব লাইন ব্যবহারকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছে প্রতিদিন সন্ধ্যায় খাজা গরীবে নেওয়াজ জেনারেটর এন্ড পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন সেন্টারের একজন লোক প্রতিদিন লাইট প্রতি ৩০-৫০ টাকা করে উত্তোলন করে।